বাস থেকে নেমেই এদিক ওদিক চাইল রাই। সারাটা রাস্তা এই একজনের মুখ ভাবতে ভাবতেই এসেছে। ভাবতে চায়নি, বহুবার জোর করে ভাবনাটা সরিয়ে দিতে চেয়েছে – কিন্তু জানলার হাওয়ায় উড়ে যাওয়া চুলের মতোই মনটা আজ ভারি অবাধ্য হয়ে আছে। ইচ্ছে করেই নির্ধারিত সময়ের দশ মিনিট আগেই এসেছে সে।
তবু নিশ্চিত হয়ে নেওয়া। মনটা সেই কলেজ জীবনের মতোই ছটফট করছে। অনেকদিন বাদে দেখা হবে বলেই কি? যদিও এই ছটফটানিটা মনমতো হচ্ছে না একটুও। নিজেকেই নিজে শাসন করতে চাইল রাই। হাত দিয়ে মুখের ওপর এসে পড়া চুলটা ঠিক করে মুখে একটা নির্লিপ্ত ভাব আনার চেষ্টা করল। আর এই প্রচেষ্টার মুখেই পিছন থেকে হালকা হাসির স্বর বেজে উঠল – দশ মিনিট আগে এসেও খোঁজাখুঁজি?
তবু নিশ্চিত হয়ে নেওয়া। মনটা সেই কলেজ জীবনের মতোই ছটফট করছে। অনেকদিন বাদে দেখা হবে বলেই কি? যদিও এই ছটফটানিটা মনমতো হচ্ছে না একটুও। নিজেকেই নিজে শাসন করতে চাইল রাই। হাত দিয়ে মুখের ওপর এসে পড়া চুলটা ঠিক করে মুখে একটা নির্লিপ্ত ভাব আনার চেষ্টা করল। আর এই প্রচেষ্টার মুখেই পিছন থেকে হালকা হাসির স্বর বেজে উঠল – দশ মিনিট আগে এসেও খোঁজাখুঁজি?
চমকে পিছন ফিরতেই কিশোরের মুখোমুখি। নির্লিপ্ত মুখ। কিন্তু চোখের কোণে চিকচিকে হাসি। রাই এই চোখ চেনে। তার মানে কিশোর এবারেও আগে এসে পৌঁছেছে। না চাইলেও ভিতর থেকে একটা খুশি তার সারা মুখে হাজার ওয়াটের বাতি জ্বালিয়ে দিল। ঠোঁটের কোণে হাসি ভাঙল – সেই তুই-ই জিতলি?
এই ঝলমলে মুখের হাসিটা খুব সংক্রামক। কিশোরও হেসে ফেলল – আমি আরও পনেরো মিনিট আগে এসেছি। জানিসই তো..
- মেয়েরা রাস্তায় অপেক্ষা করলে ভারি বিশ্রি দেখায়।
একযোগে হেসে উঠল দুজনেই। তারপরেই একটু নীরবতা। যেন এতটা হাসাহাসি উচিত হল না। একটু ইতস্তত করে রাই জিজ্ঞাসা করল – কটার মধ্যে ফিরতে হবে?
- আজ সারাদিন ফ্রি আছি।
বিস্ময়ের অভিব্যক্তিটা রাইয়ের মুখে ভালোভাবেই ফুটে উঠল। সেটা দেখে অপরপক্ষের দ্বিগুন অস্বস্তি। তাড়াতাড়ি সামলাতে গিয়ে বলে বসল – অ্যাপেটাইটে যাবি? মানে তোর যদি সময় থাকে, তাহলেই। সকালের খাবারটা মিস করেছি।
- মেয়েরা রাস্তায় অপেক্ষা করলে ভারি বিশ্রি দেখায়।
একযোগে হেসে উঠল দুজনেই। তারপরেই একটু নীরবতা। যেন এতটা হাসাহাসি উচিত হল না। একটু ইতস্তত করে রাই জিজ্ঞাসা করল – কটার মধ্যে ফিরতে হবে?
- আজ সারাদিন ফ্রি আছি।
বিস্ময়ের অভিব্যক্তিটা রাইয়ের মুখে ভালোভাবেই ফুটে উঠল। সেটা দেখে অপরপক্ষের দ্বিগুন অস্বস্তি। তাড়াতাড়ি সামলাতে গিয়ে বলে বসল – অ্যাপেটাইটে যাবি? মানে তোর যদি সময় থাকে, তাহলেই। সকালের খাবারটা মিস করেছি।
দুচোখ টান করে দেখল রাই। ওই মুখ দেখে মনে হল, শুধু আজ সকাল নয়, অনেকগুলো খাবারই মিস হয় আজকাল। মনে মনে ভাবল – একবছর খুব কম সময় নয়। চটপট মাথা নাড়ল। কিশোর যে একেবারেই খিদে সহ্য করতে পারে না, সেটা জানে বলেই চটপট উত্তর এসে গেল ঠোঁটের ডগায়।
- বিশেষ কোন তাড়া নেই আজ। তাছাড়া আমারও খিদে পেয়েছে। চল যাই।
পরিস্থিতির টানটান ভাবটা একটু হালকা হল। অ্যাপেটাইটে পৌঁছে পা যেন আপনি চলে গেল একটা নির্দিষ্ট টেবিলে।বসার পরে আবার যৌথ হাসি। এত খুশি আসছে কেন, রাই জানে না। জানতে চাইছেও না। শুধু এই মুহূর্তগুলো অনুভব করতে চাইছে প্রাণ প্রাণ করে। কিশোর চটপট অর্ডার দিয়ে দিল। সবই রাইয়ের ফেভারিট ডিস। খাওয়ার সঙ্গে অনর্গল কথা – আনন্দের অনর্থক বকবকম।
- বিশেষ কোন তাড়া নেই আজ। তাছাড়া আমারও খিদে পেয়েছে। চল যাই।
পরিস্থিতির টানটান ভাবটা একটু হালকা হল। অ্যাপেটাইটে পৌঁছে পা যেন আপনি চলে গেল একটা নির্দিষ্ট টেবিলে।বসার পরে আবার যৌথ হাসি। এত খুশি আসছে কেন, রাই জানে না। জানতে চাইছেও না। শুধু এই মুহূর্তগুলো অনুভব করতে চাইছে প্রাণ প্রাণ করে। কিশোর চটপট অর্ডার দিয়ে দিল। সবই রাইয়ের ফেভারিট ডিস। খাওয়ার সঙ্গে অনর্গল কথা – আনন্দের অনর্থক বকবকম।
খাওয়া শেষ হতে রাইয়ের মুখ থেকে আপনি বেরিয়ে এলো – গঙ্গার ধারে যাবি একটু? বলে ফেলে মনে মনে নিজেকেই ভ্যাঙচালো। কিশোরের মুখ কিন্তু ভারি উজ্জ্বল হয়ে উঠল এই কথা শুনে। আর এই উজ্জ্বল মুখটা যেন রাইকে একধাক্কায় অনেকগুলো বছর পিছিয়ে দিল।
চটপট বিল মিটিয়ে দুজনে বাইরে চলে এলো। বাসটাও এসে দাঁড়াল তক্ষুণি। একলাফে দুজনে বাসে উঠে পড়ল। ওলা বা উবের ডাকার কথা মনেই এলো না। অথচ শেষ কবে বাসে চড়েছে সেটা কিশোর নিজেও বলতে পারবে না।
কাজের দিনের দুপুর। গঙ্গার এদিকটা একটু ফাঁকাই। পা ছড়িয়ে বসল দুটিতে। কিশোর জানতে চায় – এখন তো শীতকাল। ছুটির দিনে শালবন আর সবুজ পাহাড় দেখতে যাচ্ছিস নাকি? অঘ্রাণের সোনালি ধানভরা মাঠের আল ধরে হেঁটেছিস এবার?
মাথা নিচু করে ঘাস ছেঁড়ে রাই – গিয়েছিলাম বন্ধুদের সঙ্গে একদিন।
- মোটে একদিন?
- ভালো লাগেনি। তাই আরেকবার একা একা –
কতবার মানা করেছি – বলে ঝেঁঝে উঠতে গিয়েও নিজেকে সামলে নিল কিশোর। গম্ভীরভাবে জানতে চাইল – ভালো লাগল?
মাথা নিচু করে ঘাস ছেঁড়ে রাই – গিয়েছিলাম বন্ধুদের সঙ্গে একদিন।
- মোটে একদিন?
- ভালো লাগেনি। তাই আরেকবার একা একা –
কতবার মানা করেছি – বলে ঝেঁঝে উঠতে গিয়েও নিজেকে সামলে নিল কিশোর। গম্ভীরভাবে জানতে চাইল – ভালো লাগল?
নিঃশব্দে মাথা নাড়ল রাই। অন্যদিকে মুখ ফিরিয়ে বসে রইল।
চুপ করে বসে থাকল কিশোরও। মনে মনে ভাবল, অথচ সব যখন ঠিক ছিল, দুজনের একটা সুখের সংসার ছিল – তখন এই ছোটখাটো বেড়ানো, খোলা আকাশের নীচে সময় কাটানোর বায়না নিয়ে নিত্য অশান্তি করতে হে মহারানী। কিশোরের কাজ, কর্মজীবনের উন্নতি কোনোটারই কোনো মূল্য ছিল না তোমার কাছে। শেষে একদিন চলেও গেলে তেজ দেখিয়ে! আর আজ যখন স্বাধীন হলে, যাওয়ার সুযোগ পেলে – তখন আর ভালো লাগছে না! তোমার জীবনের প্রায়রিটি যে আজও এই কিশোর গাঙ্গুলি– তা বুঝতে আর কতদিন লাগবে তোমার?
মনে মনেই ভাবল শুধু – মুখে বলা হল না। বয়ে যেতে থাকল নদী। আনমনে দু- একটা নুড়ি ছুঁড়ে ফেলল জলে। নিস্তব্ধতা ভেঙে আওয়াজ এলো – টুপ্ টুপ্।
বেশ অনেকক্ষণ পরে, খুব মৃদুস্বরে রাই প্রশ্ন করে – এতদিনে তোর প্রমোশন হয়ে গেছে নিশ্চয়ই?
- নাহ্ – আনমনা হাসল কিশোর।
- সে কি? কে ম্যানেজার হলো তাহলে?
- জানি না।
- মানে?
- চাকরিটা ছেড়ে দিয়েছি। অন্য একটা ফার্মে জয়েন করেছি। এটা একটু ছোট। ওয়ার্ক প্রেশার কম। কি হবে এত দৌড়ে?
চুপ করে রইল রাই। তাই এতো সময় এখন! অথচ দুজনে একসাথে থাকার সেই দিনগুলোতে শুধু স্কুল আর ঘর নিয়ে রাই যখন ভীষণ একলা – দুজনের সংসার তখন শুধু রাইয়ের একার। কিশোর সারাদিন হয় অফিসে নয় ট্যুরে। বড়জোর রাতে চার পাঁচ ঘণ্টার জন্য ঘুমোতে আসে। রাইয়ের একলা বালিশ. একলা জানলা, একলা মন জুড়ে থৈ থৈ নোনা জল। দমবন্ধ হয়ে আসে। ভেসে ওঠার জন্য কিশোরের হাত খোঁজে মরিয়া হয়ে। কিশোর তখন ল্যাপটপে প্রোজেক্ট আপলোড করতে ব্যস্ত অথবা ট্যুরের জন্য জিনিস গোছাতে। তাও দাঁতে দাঁত চেপে অপেক্ষায় ছিল রাই। মনে আশা ছিল ঠিক বোঝাতে পারবে কিশোরকে। অথচ বাবার হঠাৎ শরীর খারাপের সময় রাই যখন ডাক্তার আর নার্সিং হোমে দৌড় করে করে দিশাহারা, তখনও কিশোর অফিসের মিটিং নিয়ে ব্যস্ত রইল। তারপরেই রাই সিদ্ধান্ত নেয় – আর নয়। একাই যদি বাঁচতে হয়, নিজের মতো করেই বাঁচবে।
- নাহ্ – আনমনা হাসল কিশোর।
- সে কি? কে ম্যানেজার হলো তাহলে?
- জানি না।
- মানে?
- চাকরিটা ছেড়ে দিয়েছি। অন্য একটা ফার্মে জয়েন করেছি। এটা একটু ছোট। ওয়ার্ক প্রেশার কম। কি হবে এত দৌড়ে?
চুপ করে রইল রাই। তাই এতো সময় এখন! অথচ দুজনে একসাথে থাকার সেই দিনগুলোতে শুধু স্কুল আর ঘর নিয়ে রাই যখন ভীষণ একলা – দুজনের সংসার তখন শুধু রাইয়ের একার। কিশোর সারাদিন হয় অফিসে নয় ট্যুরে। বড়জোর রাতে চার পাঁচ ঘণ্টার জন্য ঘুমোতে আসে। রাইয়ের একলা বালিশ. একলা জানলা, একলা মন জুড়ে থৈ থৈ নোনা জল। দমবন্ধ হয়ে আসে। ভেসে ওঠার জন্য কিশোরের হাত খোঁজে মরিয়া হয়ে। কিশোর তখন ল্যাপটপে প্রোজেক্ট আপলোড করতে ব্যস্ত অথবা ট্যুরের জন্য জিনিস গোছাতে। তাও দাঁতে দাঁত চেপে অপেক্ষায় ছিল রাই। মনে আশা ছিল ঠিক বোঝাতে পারবে কিশোরকে। অথচ বাবার হঠাৎ শরীর খারাপের সময় রাই যখন ডাক্তার আর নার্সিং হোমে দৌড় করে করে দিশাহারা, তখনও কিশোর অফিসের মিটিং নিয়ে ব্যস্ত রইল। তারপরেই রাই সিদ্ধান্ত নেয় – আর নয়। একাই যদি বাঁচতে হয়, নিজের মতো করেই বাঁচবে।
আজ রাই নেই বলেই না এই জীবনের অসারতা বুঝতে পারল! অথচ তখন যদি...যাকগে! দাঁত থাকতে দাঁতের মর্যাদা আর কে দেয়!
এভাবেই ভাবে ওরা। ভাবে, আমি ছাড়া ও অচল। কয়েনের উলটোপঠে যে লেখা – তুমি ছাড়া আমিও নেই – সেটা আর ঘুরিয়ে দেখা হয় না। তাই অভিমানের, মনখারাপের ছোট্ট চিড় বাড়তে বাড়তে কখন যেন বিচ্ছেদের অপার নদী হয়ে যায়। ভাবতে ভাবতে বিকেল হল। বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যে। এবার ফিরতে হয়।
যেন অনেক দূর থেকে কিশোরের কথা ভেসে এল – কাগজগুলো....
- সই করেছ? – দূরতর গলা রাইয়ের।
- নাঃ। তুমি করে নাও, তারপরে –
কাগজগুলো ব্যাগে ঢোকাতে ঢোকাতে উজ্জ্বল হযে ওঠে রাইয়ের মুখ – তাহলে আরেকদিন আসতে হবে তো!
- সই করেছ? – দূরতর গলা রাইয়ের।
- নাঃ। তুমি করে নাও, তারপরে –
কাগজগুলো ব্যাগে ঢোকাতে ঢোকাতে উজ্জ্বল হযে ওঠে রাইয়ের মুখ – তাহলে আরেকদিন আসতে হবে তো!
- সামনের রবিবার সময় হবে তোর? সকাল সকাল আসতে পারলে সারাদিনের জন্য কোথাও ঘুরে আসা যেত।
- তোর সময় হবে? – আবারও অবাক স্বর রাইয়ের।
- একটাই দিন তো! – একটু অপরাধী গলাটা কিশোরের?
*
*
*
রবিবার দেখা হল যখন, তখনও গাড়ি নিয়ে আসার কথা মনে হল না কিশোরের। বরং সেই কলেজের ক্লাস পালানোর দিনগুলোর মতো দুজনে চড়ে পড়ল ক্যানিংগামী লোকালে। এক প্যাকেট বাদাম ভাগাভাগি করে খেল। যে স্টেশনটা ভালো লাগল – ঝুপঝাপ করে নেমে পড়ল সেখানেই। তাদের অনির্দেশ্য ঘোরায় সামিল হল ভাঙা মন্দির, বটগাছের বাঁধানো বেদী, টিনের ছাউনির চায়ের দোকান। দুটো বিস্কুট খেতে দেওয়ায় সারাদিন সঙ্গ দিল লেজকাটা নেড়ি কুকুরটা।
মাটির মেঝে, ইঁটমাটির দেওয়ালের ভিতর বেঞ্চি আর টেবিল পাতা। দুপুরবেলা সেখানে তৃপ্তি করে খেল মোটা চালের ভাত, আলুভাজা, কুমড়ো-বেগুন দিয়ে শাকচচ্চড়ি আর পোনা মাছের ঝোল।
- তোর সময় হবে? – আবারও অবাক স্বর রাইয়ের।
- একটাই দিন তো! – একটু অপরাধী গলাটা কিশোরের?
*
*
*
রবিবার দেখা হল যখন, তখনও গাড়ি নিয়ে আসার কথা মনে হল না কিশোরের। বরং সেই কলেজের ক্লাস পালানোর দিনগুলোর মতো দুজনে চড়ে পড়ল ক্যানিংগামী লোকালে। এক প্যাকেট বাদাম ভাগাভাগি করে খেল। যে স্টেশনটা ভালো লাগল – ঝুপঝাপ করে নেমে পড়ল সেখানেই। তাদের অনির্দেশ্য ঘোরায় সামিল হল ভাঙা মন্দির, বটগাছের বাঁধানো বেদী, টিনের ছাউনির চায়ের দোকান। দুটো বিস্কুট খেতে দেওয়ায় সারাদিন সঙ্গ দিল লেজকাটা নেড়ি কুকুরটা।
মাটির মেঝে, ইঁটমাটির দেওয়ালের ভিতর বেঞ্চি আর টেবিল পাতা। দুপুরবেলা সেখানে তৃপ্তি করে খেল মোটা চালের ভাত, আলুভাজা, কুমড়ো-বেগুন দিয়ে শাকচচ্চড়ি আর পোনা মাছের ঝোল।
তবু, তবুও বিকেলে প্ল্যাটফর্মের বেঞ্চিতে বসে ডিভোর্সের কাগজগুলো বের করল রাই। তুলে দিল কিশোরের হাতে। কিশোরের এমন অনুভূতিশূন্য মুখ কি আগে কখনো দেখেছে রাই? কাগজ খুলতেই সে মুখে একটু রং ফিরল – সইটা করিস নি?
আশ্চর্য! রাই হাসতেও পারল – ভাবলাম একসাথেই সই করি।
হাসি দেখে এত কষ্ট হয়, কিশোরের জানা ছিল না। কতো কীই তো জানার বাকি আছে এখনো। তবু আবেগহীন গলাতেই বলল – খুব দরকার সই করার?
- আমার কোনো দরকার নেই, কিন্তু...
- থাক তাহলে। বলে কাগজটাকে ভাঁজ করে পকেটে ভরে ফেলল কিশোর।
আবেগের পথ, মনের পথ জুড়ে দাঁড়ালো অহম্। তাই মুখ ফুটে বলতে পারল না – ওরে ফিরে আয়। আমি আর পারছি না। তার বদলে অন্যদিকে তাকিয়ে খুব সাদামাটা গলায় জানতে চাইল – আরেকবার শুরু করা যায়?
- আমার কোনো দরকার নেই, কিন্তু...
- থাক তাহলে। বলে কাগজটাকে ভাঁজ করে পকেটে ভরে ফেলল কিশোর।
আবেগের পথ, মনের পথ জুড়ে দাঁড়ালো অহম্। তাই মুখ ফুটে বলতে পারল না – ওরে ফিরে আয়। আমি আর পারছি না। তার বদলে অন্যদিকে তাকিয়ে খুব সাদামাটা গলায় জানতে চাইল – আরেকবার শুরু করা যায়?
এদিকে ফিরলে কিশোর দেখতে পেত রাই থরথর করে কাঁপছে। চূড়ান্ত ভেঙে পড়ার মুহূর্তে রাই তাকিয়ে দেখল কিশোরের মুখ অন্যদিকে ঘোরানো! প্রবল প্রচেষ্টায় আত্মস্থ করল নিজেকে – না রে। একবার সামলেছি। আবারও যদি – তার চেয়ে এই ভালো।
মুহূর্তটা গড়িয়ে গেল অসাবধানে। আবার কী কোনদিন এইভাবে আসা হবে ওদের? আর আসেও যদি, খুঁজে পাবে এই মুহূর্তটাকে? পেলেও গড়তে পারবে কি?
দুজনে চুপচাপ গাড়িতে উঠে বসল। প্রশ্নগুলো পাক খেতে লাগল ওদের চারপাশে। ট্রেন ছুটে চলল খোলা মাঠ, খেত, আকাশ পেরিয়ে কংক্রীটের জঙ্গলের দিকে।
2 comments:
bastob. ..
ধন্যবাদ
Post a Comment