বনধু হরেক রকম। কিছু চেনা প্রাত্যহিক দেখাশোনায়, কিছু অন্তরের আন্তরিকতায়। অন্তরমিলের তালিকায় প্রথমেই যার নাম, তাকে সবাই একডাকে চেনে – তার নাম Arctic Tern.
ছোট্ট একফুটিয়া পাখি,
আমারি মতন শীতকাতুরে। তাই প্রতি বছর কুমেরু থেকে সুমেরু উড়ে যায় গরমের খোঁজে। কিছুদিন ঘরকন্না,
তার অবধারিত ফল কুচিপুচি ছানা। তাদের ডানায় একটু জোর আসতেই ইস্কুলের পাঠ শুরু হয়ে যায়। রীতিমতো কড়া প্রশিক্ষণ। সময় তো বেশী নেই!
Arctic এ শীত আসার আগেই যে উড়ে যেতে হবে
Antarctic এ। ওদের জীবনে শীতকাল নেই,
দুটিই গরমকাল। আর পথ ও তো কম নয়। সারা বছরে arctic
tern প্রায় সত্তর
–আশি হাজার কিলোমিটার আকাশ পরিক্রমা করে। বাঁচে প্রায় তিরিশ বছর। তার মানে সারা জীবনে পাড়ি দেয় আড়াই লাখ কিলোমিটার
– মাত্তর বার তিনেক চাঁদ থেকে ঘুরে আসা আর কি!
একটা বিশেষ দল একই পথ পাড়ি দেয়। কিভাবে তারা নিজেদের পথ চিনে নেয়,
তার রহস্যভেদ হয়নি আজও। মজার বিষয় হল,
দক্ষিণমুখী যাত্রার সময় সে সবসময়েই দক্ষিণমুখো হয়ে বসে। যতই তাকে ঘুরিয়ে দাওনা কেন,
কোন এক অজানা কম্পাস তাকে ঠিক দোখনে করে দেবেই। আবার ফিরতি পথে উল্টি চাল। কিছুতেই তখন তাকে উত্তরমুখী হওয়া থেকে আটকান যায় না।
জীবন যখন ক্লান্ত করে,
আমি কখনো বলতে চাইনা-
ক্লান্তি আমার ক্ষমা করো প্রভু। বরং প্রার্থনায় অবনত হই আমার ছোট্ট বনধুটির কাছে। তার অবিরাম চলা আবারো একবার শক্তি দেয় বাধা টপকে এগিয়ে যাবার,
দিকভ্রান্ত না হবার। থামার অন্য নাম ই তো মরণ!
মরার আগে কিছুতেই মরব না,
কিছুতেই না।
No comments:
Post a Comment